সুবিশাল এই পৃথিবীর কত কী যে আমাদের অজানা রহস্য, তার শেষ নেই। বলা হয় যে সব রহস্যেরই একটা সূত্র থাকে। সেই সূত্র ধরে রহস্যের কেন্দ্রে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। এইভাবে আমাদের এই পৃথিবীর বহু রহস্যের সমাধান ঘটছে। কিন্তু যে স্থলভাগ আজ থেকে দশ হাজার বছরের বেশি সময় আগে হারিয়ে গেছে বলে মনে করা হয়, তার সূত্র আর কি পাওয়া সম্ভব? এই সভ্যতার নাম আটলান্টিস। যা এক সময় ছিল, তারপর আর নেই। জানা নেই কবে থেকে সে নেই। জানা নেই সে কী করে হারিয়ে গেছে। হারানো আটলান্টিস নিয়ে সারা পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে আছে অজস্র মিথ।
ইতিহাস বিশ্লেষণের আগে দেখে নেওয়া যাক পুরাণ কী বলে। রূপকথায় বা উপকথায় আমরা অনেকবার শুনেছি যে রাজার নাম অনুযায়ী রাজ্যের নাম হয়েছে। পৃথিবীতে নেমে আসা স্বর্গরাজ্য আটলান্টিসের ক্ষেত্রেও সে কথা প্রযোজ্য। পসিডন ছিলেন সমুদ্রের দেবতা। তাঁরই বংশধরেরা এই দ্বীপটিতে এক স্বর্গরাজ্য গড়ে তোলেন। দ্বীপটি খুব একটা ছোট ছিল না। সেখানে বাস করতেন এই পৃথিবীর মানুষ ইভনর। তাঁর স্ত্রীর নাম লুসিপি। এঁদের একমাত্র মেয়ে ক্লিটো। মেয়ে ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠছে। এগিয়ে আসছে তাঁর বিয়ের বয়স। কিন্তু বাবা-মা মেয়ের বিয়ে দিয়ে যেতে পারেননি। তাঁদের মৃত্যু হয় অকস্মাৎ। সমুদ্রের দেবতা পসিডন নিজে এসে মেয়েটিকে বিয়ে করলেন। পসিডন-ক্লিটর দশটি ছেলে হল পাঁচ জোড়া যমজ হিসেবে। এর মধ্যে যাঁর জন্ম সকলের আগে তাঁর নাম ছিল আটলাস। তিনি ভবিষ্যতে দ্বীপের রাজা হলেন। তাঁর নামেই দ্বীপের নামকরণ হল আটলান্টিস।
আটলান্টিসের উল্লেখ প্রাচীন বা আধুনিক কোনও ইতিহাসেই পাওয়া যায় না। কারণ যেখান থেকে প্রাচীন ইতিহাসের আসল মালমশলা সংগ্রহ করা হয়েছে, সেই মিশর ও গ্রিস যখন সভ্য হয়, তখনও আটলান্টিসের অস্তিত্ব ছিল না। মিশর ও গ্রিস সভ্য হওয়ার কয়েক হাজার বছর আগেই পৃথিবী থেকে অ্যাটলান্টিস অদৃশ্য হয়েছে। কিন্তু তখনই আটলান্টিসের বহু বাসিন্দা স্বদেশ ছেড়ে পালিয়ে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই ছড়িয়ে পড়েছিল। কাজেই লোকের মুখে মুখে ও জনপ্রবাদে আটলান্টিসের অনেক কাহিনিই তখন সারা পৃথিবীতে বিস্তৃত হয়ে গিয়েছিল। গ্রিক পণ্ডিত প্লেটোর রচনায় বিশদ ভাবে উল্লেখ আছে আটলান্টিসের। আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৪২৮ অব্দে জন্মগ্রহণ করেন প্লেটো। তাঁর রচনা থেকেই প্রথম এই সভ্যতা সম্পর্কে জানা যায়।
প্লেটোর বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, আটলান্টিস দ্বীপ ছিল অসংখ্য লোকের বাসভূমি। তার নগরে ছিল শত শত অট্টালিকা, বিরাট স্নানাগার, বৃহৎ মন্দির, অপূর্ব উদ্যান, আশ্চর্য সব খাল আর বিচিত্র সব সেতু। একটি খাল ছিল তিনশ ফুট চওড়া, একশ ফুট গভীর ও ষাট মাইল লম্বা। তার তীরে তীরে ছিল প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড বন্দর ও তার ভেতর দিয়ে আনাগোনা করত বড় বড় জাহাজ। মন্দিরগুলো ছিল শত শত ফুট উঁচু এবং সেই অনুপাতেই চওড়া। মন্দিরের চুড়ো ছিল সুবর্ণময় ও বাইরের দেওয়ালগুলো ছিল রৌপ্যময়। মন্দিরের ভিতরের অংশও সোনা, রুপো ও হাতির দাঁতে মোড়া ছিল। মন্দিরের মধ্যে ছিল খাঁটি সোনায় গড়া মূর্তি। শহরের পথে পথে দেখা যেত গরম জলের উত্স এবং ঠান্ডা জলের ফোয়ারা। রাজপরিবার, সাধারণ পুরুষ, নারী এমনকী অশ্ব প্রভৃতি সাধারণ পশুদেরও জন্যে ছিল আলাদা আলাদা স্নানাগার। নানা জায়গায় বড় বড় ব্যায়ামাগার গড়ে উঠেছিল। আটলান্টিসের মধ্যে পবিত্র জীব হিসেবে গণ্য করা হত ষণ্ডদের। ষাট হাজার সৈন্যকে মোতায়ন করা হয়েছিল এই দ্বীপকে পাহারা দেওয়ার জন্য।
প্লেটোর বর্ণনা অনুযায়ী ইউরোপে তখন ভূমধ্যসাগর ছিল না। তার বদলে ছিল দুটি ভূমধ্যবর্তী হ্রদ। ইতালি ছিল আফ্রিকার সঙ্গে সংযুক্ত। অর্থাৎ আফ্রিকা ও ইউরোপ ছিল পরস্পরের অঙ্গ, একই মহাদেশ। আটলান্টিস সাম্রাজ্যের অবস্থান ছিল আফ্রিকা ও আমেরিকার মাঝখানে। এক-একটি প্রকাণ্ড দ্বীপ। প্লেটোর মতে তত্কালীন এশিয়া, এশিয়া মাইনর ও লিবিয়াকে এক করলে যত বড় হয়, এই দ্বীপটি আকারে তত বড়ই ছিল। অর্থাৎ অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে কিছুটা ছোট। প্লেটো বলেছেন এই দ্বীপের একদিকে ছিল উঁচু পর্বতশ্রেণি আর একদিকে উর্বরা ধরিত্রী। নাব্য নদী চলে গিয়েছে দেশের ভিতর দিয়ে। এ দেশ প্রচুর খনিজ সম্পদে ভরা, চাষবাসে সম্পন্ন, সুজলা, সুফলা এবং শস্যশ্যামলা। লেখা আছে যে, ভূগর্ভ খনন করে সে দেশের মানুষ মাটির গভীর থেকে মূল্যবান খনিজ পদার্থ এবং নানা ধরনের ধাতু আহরণ করত। রীতিমত মূল্যবান ধাতুরও উল্লেখ পাওয়া যায়। প্লেটো বলেছেন, তখন মাটি খুঁড়ে এমন ধাতুও পাওয়া গেছে, যা সোনার চেয়েও দামি। কিন্তু শুধু ধাতু বা খনিজ সম্পদ নয়, দ্বীপটিতে ছুতোরের কাজের জন্য দরকারি দামি কাঠের অভাব ছিল না। সেখানে জলে স্থলে বন্য, হিংস্র আর বৃহৎ আকারের জীব জন্তুও ছিল। আর ছিল গৃহপালিত পশু ও অনেক হাতি। শুধু জীবজন্তু, কাঠের জিনিসপত্র বা খনিজ পদার্থ নয়, পৃথিবীর যেখানে যত সুগন্ধি, তার প্রায় সবই পাওয়া যেত এখানে। এর কোনওটা এসেছে গাছের পাতা থেকে, কোনওটা ফুল থেকে আবার কোনওটা বা ফল থেকে। প্লেটোর বিবরণ থেকে বোঝা যায় যে, দ্বীপে ফলমূলের অভাব ছিল না। বৈচিত্রও ছিল যেমন, ফলনও হত তেমন। গাছে গাছে এমন ফলও হত, যা তুলে রাখতে গেলে নষ্ট হয়ে যেত। আবার অন্যদিকে কিশমিশ বা আখরোটের মতো এমন ফলও হত, যা তুলে রাখা যেত শুকনো খাদ্য হিসেবে। কত সব অদ্ভুত নাম-না-জানা নতুন ফলের বিবরণ পাওয়া যায় সেই বিবরণীতে।
অ্যাটলান্টিস ছিল প্রবল পরাক্রমশালী দেশ। আশেপাশের সমস্ত দ্বীপ আটলান্টিসের শক্তিমত্তার কাছে পরাক্রান্ত ছিল। ফলে এক এক করে সেই সব দ্বীপকে আটলান্টিসের কাছে বশ্যতা স্বীকার করতে হয়। শুধু তাই নয়, সামান্য আগ্রাসন ক্রমে লোভ বাড়ায়। ফলে মহাদেশ জয়ের দিকেও আটলান্টিস হাত বাড়ায়। কিন্তু এরকম এক সভ্যতা একদিন হার স্বীকার করে আর এক বিপুল শক্তিশালী সভ্যতার কাছে। তার নাম এথেন্স। এ কথার ঐতিহাসিক সত্যতা এখনও প্রমাণিত নয়। কারণ এ কথাও যুক্তিসঙ্গত যে, এথেন্সকে শক্তিশালী দেখানোর জন্য হয়তো এমনটা লিখেছিলেন প্লেটো। মনে রাখতে হবে, এথেন্স ছিল তাঁর জন্মভূমি।
আবার এ কথাও বলা হয় যে, আটলান্টিসের অধিবাসীরা নাকি ঐশ্বর্যের ও শক্তির গর্বে অত্যাচারী, অবিচারী ও মহাপাপী হয়ে উঠেছিল। শেষদিকে আর ধর্মের শাসন মানত না তারা। মনে রাখা দরকার যে, শুরুতেই বলা হয়েছে সমুদ্রদেবতার উত্তরসূরিরাই এই দীপের শাসক ছিলেন। আর সেই কারণেই মনে হয় দেবতারাও তাঁদের উপর বিরূপ হয়ে উঠেছিলেন। অবশেষে দেবতার ক্রোধে একদিন হঠাৎই রুদ্রমূর্তি ধারণ করে সমুদ্র এবং একদিনেই গ্রাস করে নেয় এই দেশকে। নিমেষের মধ্যে ধ্বংস হয় আটলান্টিস সভ্যতা।
প্লেটো লিখেছেন যে, তাঁর পূর্বপুরুষ সোলনের জন্মের ন হাজার বছর পূর্বেই নাকি কোনও এক অজ্ঞাত কারণে রাতারাতি ধ্বংস হয় আটলান্টিস। এখানে সূত্র খুঁজতে খুঁজতে চোখ পড়ে ক্রিট দ্বীপের ওপর। এটি গ্রিসের দক্ষিণ ভাগে অবস্থিত। এখানে এক প্রাচীন সভ্যতার সন্ধান পাওয়া গেছে। এ অঞ্চলে প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে গড়ে ওঠা ইজিয়ান সভ্যতা ছিল অত্যন্ত উন্নত। ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ নাগাদ ইজিয়ান সভ্যতা ধ্বংস হয় একান্তই আকস্মিক ভাবে। বহুদিন পর্যন্ত এই ধ্বংসের কোনও কারণ খুঁজে না পাওয়া গেলেও পরে প্রত্নতাত্ত্বিকরা অনুসন্ধান চালিয়ে দেখেছেন যে, ক্রিট ও পার্শবর্তী ইজিয়ান সাগরের মনোয়ন সাম্রাজ্য ধংস হওয়ার মূলে আছে এক আগ্নেয়গিরির ভয়ঙ্কর জাগরণ। এই আগ্নেয় বিস্ফোরণ ঘটেছিল ক্রিটের উত্তরে থেরা দ্বীপে। আনুমানিক ১৪৭০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে থেরা দ্বীপের বুকে অবস্থিত ৪৯০০ ফুট উঁচু আগ্নেয়গিরিটি হঠাৎ যে অগ্নি উদ্গিরণ শুরু করেছিল, তাতে সেই দ্বীপের কিছুটা অংশই শুধু জলের নীচে বসে যায়নি, আশেপাশের বেশ কিছু ভূখণ্ডও প্লাবিত হয়েছিল সমুদ্র স্রোতে।
এইভাবেই ধংস হল ক্রিট দ্বীপ সহ প্রাচীন ইজিয়ান সভ্যতা। বেশ কিছু কারণে ইজিয়ান সভ্যতার সঙ্গে আটলান্টিস সভ্যতার সংযোগটা বেশ মজার।
১) প্লেটো লিখেছেন যে, তাঁর পূর্বপুরুষ সোলনের জন্মের ৯০০০ বছর পূর্বে ধংস হয়েছে অ্যাটলান্টিস। এখন যদি ধরে নেওয়া হয় যে উনি ৯০০ লিখতে গিয়ে একটা শূন্য বেশি লিখে ফেলেছিলেন, তবে কিন্তু ইজিয়ান সভ্যতার বিনাশ ও আটলান্টিসের হারিয়ে যাওয়া এক বলে ধরে নেওয়া যায়।
২) প্লেটো তাঁর বিবরণীতে অ্যাটলান্টিস দ্বীপের আয়তন জানিয়েছেন ৮০০,০০০ বর্গমাইল। কিন্তু যদি আবার ধরে নেওয়া হয় যে ভুলবশত তিনি একটি শূন্য বেশি দিয়েছেন, তাহলে এই আয়তন অনায়াসে ধরে যাবে ইজিয়ান সাগরের বুকে।
৩) গ্রিক শব্দ ভাণ্ডারে ‘অপেক্ষাকৃত বড়’ ও ‘মধ্যবর্তী’ শব্দদুটি লেখাতে অনেকটা একই রকম। এবারে প্লেটো লিখেছেন যে, অ্যাটলান্টিস দ্বীপটি এশিয়া ও লিবিয়ার থেকে ‘অপেক্ষাকৃত বড়’। যদি ধরে নেওয়া যায় যে, তিনি লিখতে চেয়েছিলেন যে সেটি এশিয়া ও লিবিয়ার ‘মধ্যবর্তী’, তাহলে কিন্তু আবার সেই ক্রিট দ্বীপের অবস্থানকেই বলা হচ্ছে।
১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে আটলান্টিসের অস্তিত্ব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা নিয়ে একটি বই প্রকাশিত হয়। বইটির লেখক মার্কিন বিশেষজ্ঞ ইগ্নেশাস ডনেলি। আটলান্টিস বিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি বিশ্ববিখ্যাত। তিনি তাঁর গবেষণায় বলেন যে, কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কারের আগেও যে আমেরিকা ছিল দীর্ঘকাল ধরে, তার সাথে প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার বেশ কিছু মিল আছে। তাঁর মনে হয়েছিল পূর্ব-পশ্চিমের দুটো সভ্যতারই উত্স এক। মাঝে যেন কেউ রয়েছে, যেন রয়েছে কোনও সভ্যতা, যার থেকে পূর্ব-পশ্চিম দুজনেই কিছু না কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নিচ্ছে। আর তাই দুই সভ্যতার মধ্যে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে প্রবল মিল। এই যোগসূত্র হিসেবে ডনেলির মনে হয়েছিল আটলান্টিসের কথা। এর মাধ্যমেই যেন পূর্ব-পশ্চিমের মেলবন্ধন ঘটেছিল। আর কোনও কারণে দৈব দুর্বিপাকে যখন জলের তলায়ে ডুবে গেল আটলান্টিস, তখন পূর্ব-পশ্চিমের মধ্যে আর কোনও যোগসূত্র রইল না।
এই দৈব দুর্বিপাকের কারণ হিসেবে তিনি বিজ্ঞান সম্মতভাবে ভূমিকম্পকে চিহ্নিত করেছিলেন। আটলান্টিক মহাসাগরে দাঁড়িয়ে থাকা আজোর্স দ্বীপপুঞ্জকে সেই ডুবে যাওয়া সভ্যতার জলের উপরে মাথা তুলে রাখা পর্বতচূড়া হিসেবে দেখেছিলেন তিনি। কিন্তু ডনেলির এই সব বক্তব্য বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে অনেকটাই অবিশ্বাস্য ও অসত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে। আটলান্টিকের তলদেশ পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, সেখানে কোনও সভ্যতার অবশিষ্টাংশ পড়ে নেই। তাছাড়া এই মহাসাগরে এমন কোনও প্রলয়ের চিহ্ন পাওয়া যায়নি যে, তা কোনও সভ্যতাকে আমূল বিনাশ করবে। আর সেই কারণেই আটলান্টিক মহাসাগরে দাঁড়িয়ে থাকা আজোর্স দ্বীপপুঞ্জকে সেই ডুবে যাওয়া সভ্যতার জলের উপরে মাথা তুলে রাখা পর্বতচূড়া হিসেবে ধরাটা যুক্তিহীন হয়ে পড়েছে। আজোর্স যেখানে জলের উপর মাথা তুলে আছে, আটলান্টিক মহাসাগরের গভীরে তার তলদেশ দিয়ে উত্তর-দক্ষিণে চলে গিয়েছে দীর্ঘ এক শৈলশিরা। এর নাম মধ্য আটলান্টিক শৈলশিরা। এটি একটি আগ্নেয়গিরি অঞ্চল। এখানে আছে ভূমিকম্পের দীর্ঘ ইতিহাস। ভূখণ্ড এখানে ফুলে ফেঁপে উঠছে। যার ফলে আজোর্স ফুলে উঠে জলের তলা থেকে ক্রমশ উপরে উঠে আসছে। আর তাই উপর থেকে জলের তলায়ে আটলান্টিসের তলিয়ে যাওয়াকে এক্ষেত্রে ‘মিথ’ বলাই শ্রেয়।
এইভাবে বহু গবেষক অ্যাটলান্টিস নিয়ে নিজেদের তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন বিভিন্ন সময়ে। আটলান্টিস কি সত্যি ছিল? আটলান্টিস কি প্রাকৃতিক প্রলয়ের ফলে সত্যি একদিন সমুদ্রগর্ভে ডুবে গিয়েছিল? সত্যি কি প্লেটোর বিবরণ এক দার্শনিকের কল্পনার আজগুবি কাহিনি? নাকি প্লেটোর লেখার তিনটি ভ্রান্তি না থাকলে অ্যাটলান্টিসই ছিল ইজিয়ান সভ্যতা? কিন্তু বিজ্ঞানের যুক্তি ও ইতিহাসের মেলবন্ধন কোথাও খাটেনি সঠিকভাবে। আর তাই আজও আটলান্টিস এক কিংবদন্তি, এক ‘মিথ’ মাত্র। কল্পনাপ্রবণ মানুষের মনে চিরকাল যেমন থেকে যাবে আটলান্টিসের অস্তিত্ব, তেমনই যুক্তিবাদী মানুষ যুগ যুগ ধরে নতুন যুক্তি দিয়ে খুঁজে নিতে চাইবে হারানো আটলান্টিসকে।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার — হেমেন্দ্র কুমার রায়, অরূপরতন ভট্টাচার্য, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
চিত্রসূত্র — Flavio Bolla
Leave a Reply